Trade License No. | : 157933 |
---|---|
BIN | : 003976665-0101 |
“আউড়ির মাধ্যমে আমার সবজি শহরেও বেচতে পারি” ফেনশি বেগম গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা যিনি ২০১৬ সালে পাওয়ার প্রজেক্টের ‘চোখের মনি’ নারী সংগঠনের সদস্য হয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেন। এর মাধ্যমে তার বাড়ির আঙ্গিনায় বাগান করে সেখানে বিভিন্ন রকম সবজি ফলাচ্ছেন। তিনি বর্তমানে পরিবারের চাহিদা মিটানোর পর অতিরিক্ত সবজিগুলো আউড়ির মাধ্যমে শহরে বিক্রি করে অর্থও উপার্জন করতে পারছেন। এভাবেই ফেনশি বেগমের পরিবারে হাসি ফুটেছে।
“আমার ছেলেমেয়ে এখন লেখাপড়া করতে পারে” এপ্রিল, ২০১৬ থেকে রোশনা বেগম পাওয়ার প্রজেক্টের একজন সদস্য হিসেবে ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি গাইবান্ধার একটি নারী সংগঠনের সভাপতি হিসেবে আছেন। বন্যা ও নদীভাঙ্গনে জর্জরিত এই জায়গায় রোশনা বেগম জৈব সার উৎপাদন এবং শাক সবজি ফলানোর মাধ্যমে নিজের জীবন পরিবর্তন করেছেন। নিজের পরিবারের চাহিদা মিটানোর সাথে সাথে তিনি আউড়ির মাধ্যমে বাইরের মানুষের কাছেও সবজি বিক্রি করতে পারছেন। উপার্জিত টাকা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে তিনি তার পরিবার নিয়ে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছেন।
“আমার পরিবার এখন অনেক ভালো আছে” বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নেয়ার মাধ্যমে মনোয়ারা বেগম বাগানে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানতে পারেন। তারপর থেকে তিনি ও তার স্বামী একসাথে ফার্মে কাজ করেন এবং প্রতিমাসে ৩,৫০০ টাকা আয় করেন যা তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা নিয়ে আসে। আউড়ি তার জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত সবজি সরাসরি পৌঁছে দেয় শহুরে গ্রাহকদের কাছে। জৈব সার ব্যবহারের কারণে মানুষের কাছে তার শাক সবজির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং তার আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে।
শাইবা রাণী উড়িয়া ইউনিয়নের দলীয় নারী দলের একজন সদস্য। পাওয়ার প্রজেক্টের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি তার বাগানে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ ভালো ফলাফল পান। তাজা এবং কিটশানকমুক্ত সবজি বিক্রির জন্য শাইবা রাণী তার এলাকায় বিখ্যাত এবং স্থানীয় পাইকারী বিক্রেতাগণ তার থেকে সবজি কিনতে খুবই আগ্রহী। শহুরে বাজারে তার ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে আউড়ি বড় ভূমিকা পালন করে। একসময় তিনি আর্থিক দৈন্যতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে আলোর মুখ দেখতে থাকে। বর্তমানে তিনি স্থানীয় বাজারে প্রতি মাসে ২৫০০-৩০০০ টাকার সবজি বিক্রি করেন।
২০০৬ সাল হতে এসকেএস ফাউন্ডেশন, একশন এইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় লালমনিরহাটে রাজপুর ও খুনিয়াগাছের হত দরিদ্র্য মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণে ও নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তাঁত প্রকল্প চালু করে। খুনিয়াগাছে ৩ টি এবং রাজপুরে ২ টি সংগঠিত নারী দল তাঁতের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে ১৫০ টাকা মূল্যের ২ টি শাড়ি এবং ৪০ টাকা মূল্যের ৫টি গামছা উৎপাদন করা হয়। এই উৎপাদিত পন্য নারীরা স্থানীয় বিভিন্ন দোকানে ও শহরের বাজারে বিক্রি করে তাদের নিজেদের জীবন যাত্রার মান উন্নত করছে।
সিরাজগঞ্জ বাংলাদেশের একটি বন্যা প্রবনিত জেলা। এখানে কৃষিকাজ ছাড়াও তাঁত কারখানাগুলি গ্রামীণ কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এই তাঁত শিল্প বাঁধার সম্মুখীন হয় যার ফলে বেশির ভাগ শ্রমিক জীবিকার তাগিদে দিন মজুর হিসেবে কাজ শুরু করে। এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে একশনএইড বাংলাদেশ এবং ডেনমার্ক দূতাবাসের যৌথ প্রয়াস হিসাবে ২০০৮ সালে জলবায়ু প্রতিরোধক হ্যান্ডলুম কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয় যেটি ২০১০ সাল বুনন শুরু করে। এর মাধ্যমে আসহায় দরিদ্র লোকদের জন্য সমবায় সমিতি তৈরি করা হয়। এই কারখানায় বন্যা, কুয়াশা ও খরার সময় নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে। কারখানাটি ১৯ টি পরিবারের সম্পত্তির মালিকানা, ২১ জন তাঁতি এবং ১ জন বেতনভোগী কর্মচারীর পরিবারের জন্য সারা বছর জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। তাঁত মালিকদের তাঁতগুলোকে বিদ্যুতের তাঁতে রূপান্তর করার একটি প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি। এই উদ্যোগটি বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর আরও চাপ যুক্ত করছে এবং ধীরে ধীরে জ্বালানী ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। উৎপাদনের জন্য যে মানব শক্তি আগে ব্যবহৃত হত এখন তা অনেক কমে গিয়েছে। তাঁতিরা বেকার হয়ে প
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য’ হ্যাপি হোম’ নামক নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যাবস্থা করেছে একশন-এইড বাংলাদেশ । ২০০৬ সালে শুরু হয় হ্যাপি হোমের যাত্রা। এখানে শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, সুষম খাবার, বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষন, পোশাক এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হয় । হ্যাপি হোমের কিশোরীদের জন্য ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্পের প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ২০১২ সাল থেকে তাদের তৈরি হস্তশিল্প বিভিন্ন মেলাতে বিক্রি করতে থাকে। এই কিশোরীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি টেইলারিং চর্চা করে থাকেন আউড়িতে । লেখা-পড়ার পাশাপাশি মেয়েরা গান শিখছে ,নাটক ,নাচ এবং ছবি আঁকা চর্চা করছে । তাদের বিনোদনের জন্য রয়েছে বই পড়া, খেলাধুলা এবং পিকনিক এর ব্যবস্থা। আউড়ি উদ্বোধনের পর থেকে হ্যাপি হোমের কিশোরীদের তৈরি জুয়েলারি পণ্য ( ছোট মেট কাঁথা, ও্যালমেট , ছবির ফ্রেম, পুঁতির মালা , কানের দুল, হাতের ব্রেসলেট/ চুড়ি,পায়ের নূপুর , গলার সেট ,বৈশাখী কার্ড ) আউড়িতে দিয়ে আসছে । বর্তমানে উপরোক্ত পন্যগুলোর সাথে আরও কিছু নতুন পন্য আউড়িতে দেওয়া হচ্ছে (পাটের এবং কাপড়ের গহনা, ক্যানভাস, মারবেল কেক এবং প্লেইন কেক )। হ্যাপি হোমের কিশোরীদের তৈরি হস্তশিল্পের আরও নতুন নতুন পন্য আউড়িতে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।